ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

অর্থপাচার মামলা : তারেকের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি

tarekziaঅনলাইন ডেস্ক :::
সিঙ্গাপুরে অর্থপাচার মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
আজ সোমবার ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার ওই পরোয়ানা জারি করেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে এ মামলা পরিচালনাকারী বিশেষ পিপি মোশারফ হোসেন কাজল জানান, আপিল বিভাগে হাইকোর্টের দেয়া সাজার আদেশের বিরুদ্ধে তারেকের আবেদন খারিজ হয়। ফলে হাইকোর্টের দেয়া সাজার আদেশ বহাল থাকে। আমরা আপিল বিভাগের ওই বিচারিক আদালত আসে। নথিসুত্রে এ মামলায় তারেক পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে এ সাজা পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
তারেককে খালাস দেওয়ার আদেশের বিরুদ্ধে দুদকের করা আপিল আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেন সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ চলতি বছরের গত ২১ জুলাই তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে বিশ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।
একই মামলায় তার ব্যবসায়ী বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে বিচারিক আদালতের দেয়া সাত বছরের কারাদণ্ডাদেশ আপিলে বহাল রাখেন আদালত। তবে তার জরিমানা চল্লিশ কোটি থেকে কমিয়ে ২০ কোটি টাকা করা হয়। বিচারিক আদালতের দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন মামুন। আপিলে সাজা বাতিলের আবেদন করা হয়েছিলো।
২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর বিচারিক আদালত এর তৎকালীন বিচারক মো. মোতাহার হোসেন মানিলন্ডারিং এর এ মামলায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমান করতে পারেনি বলে তাকে বেকসুর খালাস দেন।
অন্যদিকে তার বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন- ২০০২ এর ১৩(২) ধারায় দায়ের দোষী সাব্যস্ত করে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেন। দণ্ডের পাশাপাশি চলিশ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।
নিম্ন আদালতে বিচার চলাকালে ২০১৩ সালের ৮ নভেম্বর দুদকের পক্ষে এবং ১৪ নভেম্বর মামুনের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়।
২০১১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত মামলাটিতে মোট ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এছাড়া সাক্ষী হিসাবে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেসটিগেশনের (এফবিআই) এজেন্ট ডেবরা লেপরোভেট এ মামলায় সাক্ষ্য দেন।
২০১১ সালের ৮ আগস্ট এ মামলায় তারেক ও মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এর আগের বছরের ৬ জুলাই তারেক রহমান ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
চার্জশিটে বলা হয়, টঙ্গীতে প্রস্তাবিত ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ পাইয়ে নির্মাণ কন্ষ্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের মালিক খাদিজা ইসলামের কাছ থেকে গিয়াসউদ্দিন আল মামুন ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা নেন। সিঙ্গাপুরে এই টাকা লেনদেন হয়। এরপর মামুন ওই অর্থ সিঙ্গাপুরের ক্যাপিটাল ষ্ট্রীটের সিটি ব্যাংক এনএতে তার নামের ব্যাংক হিসাবে জমা করেন। এই টাকার মধ্যে তারেক রহমান তিন কোটি ৭৮ লাখ টাকা খরচ করেন।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের মে মাসে কোকো সরকারের নির্বাহী আদেশে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে বিদেশে চিকিৎসা করাতে যান। তারপর তাকে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার জন্য আদালত আদেশ দিলেও তিনি ফিরে না আসায় তাকে পলাতক দেখিয়ে ওই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছিল।

পাঠকের মতামত: